ইসবগুল ও তোকমা দানা খাওয়ার নিয়ম এবং উপকারিতা

ইসবগুল ও তোকমা দানা খাওয়ার নিয়ম এবং উপকারিতা


প্রিয় পাঠক আজকে আমরা আলোচনা করব ইসবগুল ও তোকমার দানা কিভাবে খেতে হয় এবং এর কি ধরনের উপকারিতা আছে সেগুলো নিয়ে। আমরা সকলে ইসবগুল ও তোকমা দানা খাওয়া সম্পর্কে এবং এর উপকারিতা মোটামুটি ভাবে জানি। আজকে আমরা আলোচনা করব এটি খাওয়ার নিয়ম নিয়ে এবং কোন ধরনের উপকার রয়েছে সেগুলো নিয়ে। তো চলুন জেনে নেয়া যাক বিস্তারিত।



ইসবগুল ও তোকমা দানা খাওয়ার নিয়ম এবং উপকারিতা




ইসবগুলের উপকারিতা


ইসবগুলের ভুসিতে বিভিন্ন ধরনের উপকার রয়েছে এবং প্রধান উপকার হচ্ছে কোষ্ঠকাঠিন্য এছাড়াও শরীরের নানা ধরনের সমস্যা খাদ্য করুন দীর্ঘ যাত্রার স্থান থেকে বসে থাকা এবং গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার জন্য এসব গুলের ভুষি খাওয়ার জুড়ি নেই।





ইসবগুলের ভুষির উপকারিতা গুলো নিম্নে বর্ণনা করা হলো:


কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ:


ইসবগুলের ভুষি মূলত কষ্টোকাঠিনো সমস্যা প্রতিদান হিসেবে কাজ করে এটি সেবন করলে অদ্রবণীয় ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য রোগীদের মল নরম করে দেয় এবং খুব সহজেই এলিমিনেশন সম্ভব হয়।

যাদের এধরনের সমস্যা রয়েছে তারা প্রতিদিন ঘুমানোর আগে 2 চা চামচ ইসুবগুলের ভুসি এক গ্লাস গরম দুধের সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন। ইসবগুলের ভুষি এবং গরম দুধ একসাথে মিশিয়ে কিছুক্ষণ রেখে পান করতে হয়।


তবে যারা অবহেলা করেন তাদের জন্য ভবিষ্যতে বড় কোন রোগের লক্ষণ অপেক্ষা করতে পারে। মূলত যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা থাকে তারা যদি অবহেলা করে থাকেন তাহলে যেকোনো সময় তাদের কোলন ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।


ডায়রিয়া প্রতিরোধ

এমন কিছু মানুষ আছে যাদের প্রায় ডায়রিয়া রোগে ভুগতে থাকেন কিছুদিন পরপর দাঁড়িয়ে থাকে আর এই ডায়রিয়া রোগীদের টনিক হলো ইসুবগুলের ভুষি ও দই এ দুটি উপকরণ একসাথে মিশিয়ে সেবন করলে ডায়রিয়া রোগ থেকে চিরতরে মুক্তি পাওয়া যায় ঘন ঘন দুধের ডায়রিয়া হয়ে থাকে তাদের জন্য এটি খুব উপকার নিয়ে আসে তবে যারা এই ডায়রিয়া রোগ কে অবহেলা করবেন তাদের ডিহাইড্রেশনে হবার সম্ভাবনা আছে 


ইসবগুল খাওয়ার নিয়ম


ইসবগুল খাওয়ার কোনো বাধ্যবাধকতা বা নিয়ম নেই। তবে আপনাদের যে কোন খাবারের সাথে ইসবগুলের ভুষি মিশিয়ে খেতে পারবেন। যেকোনো সমস্যা সমাধানের জন্য ইসবগুল পানিতে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রেখে সেবন করলে সমস্যার সমাধান পাওয়া যায়। 


এছাড়াও আপনারা পানির পরিবর্তে হালকা কুসুম গরম দুধের সাথে মিশিয়ে ইসুবগুলের ভুষি সেবন করতে পারেন। কোষ্ঠকাঠিন্য গ্যাস্ট্রিক এবং যেকোন সমস্যায় প্রতিদিন সকালবেলা এক গ্লাস পানির সাথে দুই চা চামচ দিয়ে ভিজিয়ে খেলে খুব সহজে তা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।



তোকমা কি?

তোকমা কি



তোকমা অথবা তোকমার দানার শরবত একটি জনপ্রিয় পানীয়। দক্ষিণ এশীয় এবং মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে এটির চাহিদা অধিক পরিমাণে রয়েছে। তা ছাড়াও রমজান মাসে তোকমার চাহিদা কয়েক গুণ পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।


তোকমাতে রয়েছে 42 % কার্বোহাইড্রেট 20 %  প্রোটিন  25 % এবং প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম,  তামা, ম্যাঙ্গানিজ ও ভিটামিন সি। 


তোকমা দানার উপকারিতা


তোকমা দানা সেবন করার বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা রয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু উপকার নিম্নে উল্লেখ করা হলো:


রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণ


রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে তোকমা বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তোকমা খেলে দেহের বিপাক ক্রিয়া করে দেয়, যার ফলে কার্বোহাইড্রেট কে গ্লুকোজে রূপান্তরিত করতে সহজ হয়।


এছাড়া যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের জন্য খুব উপকারে আসে। এ ধরনের সমস্যা সমাধানের জন্য নিয়মিত তোকমা শরবত সেবন করলে এই ধরনের রোগ থেকে সমাধান মুক্তি পাওয়া যায়।


কোষ্ঠকাঠিন্য দূর


যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য বিশেষ উপকারে আসে। হজমের সমস্যার কারণে এ ধরনের কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা বেশি হয়ে থাকে। আর কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যাকে  প্রশ্রয় দিলে ভবিষ্যতে কোলন ক্যান্সার নামক রোগে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা থাকে।


তাই দ্রুত কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য এক গ্লাস পানি অথবা এক গ্লাস দুধের সাথে ভিজিয়ে রেখে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর এটি সেবন করলে এধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

তবে এটি একদিন বা দুদিন সেবন করলে আপনি সমাধান পাবেন না। এটি আপনাকে বহুদিন সেবন করতে হবে।


এসিডিটি দূরীকরণ


যাদের এসিডিটির সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য অন্যতম ভূমিকা পালন করে তকমা প্রতিদিন সকালে খালি পেটে তোকমার শরবত খেলে পেটে জ্বালাপোড়া দূর হয় এবং এসিডিটির সমস্যা ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণে আসে।


ওজন কমার ক্ষেত্রে


যাদের ওজন বেশি এবং নিজেদের ওজন নিয়ে চিন্তিত আছেন তাদের জন্য তোকমার শরবত খুবই উপকারী। কারণ এতে রয়েছে ওমেগা 3 ফ্যাটি এসিড যা দেহের জন্য অত্যন্ত উপকারী।


তাই প্রতিদিন পানিতে ভিজিয়ে দেখে পান করলে ওজন কমে যায়। এছাড়াও এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আঁশ যা বাড়তি চর্বি দূর করে এবং পেট দীর্ঘক্ষণ পরিপূর্ণ করে রাখে।


ত্বক ও চুল


ত্বক ও চুলের জন্য এটি অসাধারণ একটি পন্থা কারণ এই পথ এবং চুলের বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয় আর এই সমস্যাগুলো থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আমরা যদি প্রতিদিন নিয়মিত এক গ্লাস তোকমার শরবত সেবন করি তাহলে আমাদের ত্বক এবং চুল সতেজ এবং তাজা থাকবে ।


তোকমা খাওয়ার নিয়ম


তোকমা খাওয়ার অনেক নিয়ম রয়েছে তবে সবচেয়ে বেশি পানি অথবা দুধের সাথে ভিজিয়ে রেখে তোকমা সেবন করা হয় তাছাড়াও তোকমা বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি জাতীয় খাবার পরিবেশন করা হয় বিশেষ করে রমজান মাসে আমরা বিশেষ এক ধরনের ফালুদা নামক রেজাল্ট খেয়ে থাকি আর এর সাথে তোকমা দেওয়া হয় এছাড়া বিভিন্ন ধরনের জেলি জাতীয় স্বার্থে ব্যবহার করা হয়।


উপসংহার:


আমাদের শরীর এবং শরীরের প্রত্যেকটা অঙ্গ প্রত্যঙ্গ আমাদের কাছে অত্যন্ত প্রিয়। আমাদের শারীরিক গঠন এবং শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য আমরা প্রতিনিয়ত অনেক ধরনের ঔষধ খেয়ে থাকি। তবে প্রতিদিন নিয়ম করে ইসবগুল ও তোকমা যদি আপনি খেতে পারেন তাহলে শারীরিকভাবে বিভিন্ন ধরনের রোগ থেকে আপনি মুক্ত হতে পারবেন।


আরো পড়ুন: কিভাবে মোটা হওয়া যায় । কি কি ব্যায়াম করলে মোটা হওয়া যায়

Post a Comment

Post a Comment (0)

Previous Post Next Post