আত্তাহিয়াতু সূরা বাংলা উচ্চারণ - বাংলা অনুবাদ, ইতিহাস

আত্তাহিয়াতু সূরা বাংলা উচ্চারণ 
আত্তাহিয়াতু সূরা বাংলা উচ্চারণ - বাংলা অনুবাদ, ইতিহাস

 اَلتَّحِيَّاتُ لِلَّهِ وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ، السَّلَامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ، السَّلَامُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللَّهِ الصَّالِحِيْنَ، أَشْهَدُ أَن لَّاإِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ. 

আত্তাহিয়্যাতু লিল্লাহি ওয়াস-সালাওয়াতু ওয়াত-ত্বায়্যিবাতু; 

আস-সালামু আলাইকা আইয়্যুহান নাবিয়্যু ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ; 

আসসালামু আলাইনা ওয়া আলা ইবাদিল্লাহিছ ছালিহীন; 

আশহাদু আল লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহু।

আত্তাহিয়াতু বাংলা অনুবাদ সহ


বাংলা উচ্চারণ : আত্তাহিয়্যাতু লিল্লাহি ওয়াস-সালাওয়াতু ওয়াত-ত্বায়্যিবাতু; আস-সালামু আলাইকা আইয়্যুহান নাবিয়্যু ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ; আসসালামু আলাইনা ওয়া আলা ইবাদিল্লাহিছ ছালিহীন; আশহাদু আল লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহু।

বাংলা অনুবাদ: সব মৌখিক ইবাদত আল্লাহর জন্য। হে নবি! আপনার প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক এবং আল্লাহর অনুগ্রহ ও বরকত বর্ষিত হোক। শান্তি আমাদের ওপর এবং আল্লাহর নেক বান্দাদের ওপর বর্ষিত হোক। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ব্যতীত আর কোনো মাবুদ বা উপাস্য নাই এবং আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, নিশ্চয়ই মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর বান্দা ও রাসুল’।

আত্তাহিয়াতু পড়ার নিয়ম


প্রতি দুই দুই রাকাত পর পর বৈঠকে বসতে হয়। এবং নামাজের বৈঠকেই প্রত্যেক মুসলিম আত্তাহিয়্যাতু বা তাশাহহুদ পড়ে থাকেন। মনোযোগের সঙ্গে তাশাহুদ (আত্তাহিয়্যাতু) পড়া আবশ্যক। এসময় এর প্রত্যেকটি শব্দ ও বাক্যের মর্ম উপলদ্ধির চেষ্টা করা উচিত।

তাশাহুদ আরবি উচ্চারণ


 اَلتَّحِيَّاتُ لِلَّهِ وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ، السَّلَامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ، السَّلَامُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللَّهِ الصَّالِحِيْنَ، أَشْهَدُ أَن لَّاإِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ. 

আত্তাহিয়াতু সূরা বাংলা উচ্চারণ ছবি
আত্তাহিয়াতু সূরা বাংলা উচ্চারণ ছবি

আত্তাহিয়াতু পড়ার সময় আঙুল


নামাজি ব্যক্তি নামাজের মধ্যে যখন মৌখিকভাবে তাওহিদের সাক্ষ্য দেয়, তখন তার আঙুলও এই সাক্ষ্য দেবে। এ জন্য আত্তাহিয়াতু পড়তে পড়তে যখন ‘আশহাদু আল্লা... ইলাহা’ পর্যন্ত পৌঁছবে, তখন বৃদ্ধাঙ্গুলি ও মধ্যমা দ্বারা গোল ভিত্ত বানাবে এবং শাহাদত আঙুল দ্বারা ইশারা করবে। 

আর কনিষ্ঠা ও অনামিকা হাতের তালুর সঙ্গে যুক্ত থাকবে। 'ইল্লাল্লাহ' বলার পর শাহাদত আঙুল নিচু করবে। তবে অন্য আঙুলগুলো আপন অবস্থায় নামাজের শেষ পর্যন্ত থাকবে।

উল্লেখ্য, বৃদ্ধাঙ্গুলির নিকটতম আঙুলকে শাহাদত আঙুল বলা হয়। ইশারা শেষ করে আঙুল আর নাড়াচড়া করবে না।
 
তথ্যসূত্র: সহিহ মুসলিম হাদিস নং-১৩৩৬-১৩৩৭ সহিহ ইবনে হিব্বান-৫/২৭০, সুনানে নাসায়ী কুবরা, হাদিস নং-১১৯৩, সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং-৯৮৯, মুসনাদে আবী আওয়ানা, হাদিস নং-১৫৯৪

নামাজে আত্তাহিয়াতু পড়ার কারণ ও এর ইতিহাস


আত্তাহিয়াতু আসলে, আল্লাহর সাথে আমাদের মহানবী (সঃ) কথোপকথন একটা অংশ।

নামাজ পড়া  আল্লাহ  তাআ’লা  এক‌টি সবচেয়ে বড় এবাদত । আর এই এবাদত আল্লাহ তাআ’লা সবচেয়ে বেশি পছন্দ করেন। নামাজ যেমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তেমনি আত্তাহিয়াতু একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এটি ওয়াজিব।

আত্তাহিয়াতু আসলে, আল্লাহর সাথে আমাদের মহানবী (সা:) কথোপকথন একটা অংশ। প্রথম থেকে শুরু – হযরত মোহাম্মদ সা: যখন মক্কায় ইসলাম প্রচার করছিলেন তখন আমাদের নবী উপর কত আক্রমণ এসেছিল। এত কষ্টের মধ্যেও উম্মতের কথায় ভাবতেন। কিভাবে আমার উম্মত নাজাত পাবে। আল্লাহর কাছে এই গুলোই বলতে।

হযরত খাদিজা (রাঃ) ইন্তেকাল করেছেন। মক্কায় অল্প লোক ছিল ইসলাম ধর্মীয় বিশ্বাস করে। প্রিয় নবী রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পক্ষে অল্প কিছু মানুষ ছিল। হযরত মুহাম্মদ সা: অনেক চিন্তায় পড়ে গেলেন। 

দিনে দিনে রাসুলের (সাঃ) প্রতি কোরাইশদের অত্যাচারের মাত্রাও বেড়ে গেছে। তখন হযরত মোহাম্মদ কে আল্লাহ তাআ’লা ডেকে নিলেন রজব মাসের এক মহিমাম্বিত রজনীতে তার প্রিয় বন্ধুকে হযরত জিব্রাইল (আঃ) এর মাধ্যমে তার সান্ধিধ্যে ডেকে নিলেন, যা ইতিহাসে মে’রাজ নামে পরিচিত। এখানে আল্লাহ তাআ’লা সাথে কথা বলে বাইতুল্লাহ মোকাদ্দাস এ চলে যান। 

তখন প্রথম আসমান দ্বিতীয় আসমানে এবং তৃতীয় সিদরাতুল মুনতাহায় পৌছলেন। দুজন দুজনার খুব নিকটবর্তী হলেন। আল্লাহ হলেন মেজবান আর আমার নবী (সাঃ) হলেন মেহমান। আমাদের মহানবী (সঃ) ইসরাউল মিরাজ যাত্রার সময় এই কথোপকথন হয়েছিলো মহান আল্লাহর সাথে!

মহানবী (সঃ) যখন আল্লাহর সাথে কথোপকথন শুরু করেন

তখন আমার আপনার প্রিয় নবী আল্লাহ তাআ’লা কাছে তিনটি জিনিস ছেয়ে বসেন।

আত্তাহিয়্যাতু লিল্লাহি ওয়াসসালাওয়াতু ওয়াত্তয়্যিবাত” “সকল মর্যাদাব্যঞ্জক ও সম্মানজনক সম্বোধন আল্লাহর জন্য। সমস্ত শান্তি, কল্যাণ ও প্রাচুর্যের মালিক একমাত্র আল্লাহ। সব প্রকার পবিত্রতার মালিকও তিনি।” এক কথায় রাসুল (সাঃ) আর্থিক, শারিরীক ও মৌখিক সব ধরনের ইবাদাত একমাত্র আল্লাহর জন্য তোহফা হিসেবে পেশ করলেন।

আমাদের নবী হযরত মোহাম্মদ সা: শুধু আমাদের কথায় চিন্তা করেছেন সব সময়।  আল্লাহ তাআ’লা কাছে সব সময় আমাদের জন্য কান্না করছে। আমার উম্মত কিভাবে নাজাত পাবে। কোন সময় নিজেকে নিয়ে এত চিন্তায় মগ্ন ছিল না। সব সময় উম্মতের কথায় ভাবতেন। আমাদের নবী হযরত মোহাম্মদ (সা:) আল্লাহর কাছে আর ছেয়ে বলেন :-

আসসালামু আ’লাইনা ওয়া আ’লা- ই’বাদিল্লাহিস সলিহীন” “আমাদের প্রতি এবং আল্লাহর সকল নেক বান্দাহদের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক।”

আমাদের নবী হযরত মোহাম্মদ সা: ইসরাউল মিরাজ যাত্রার সময় এই কথোপকথন হয়েছিলো মহান আল্লাহর সাথে!  এই কথা শুনে যত ধরনের ফেরেস্তাগন আছে সবাই এক কণ্ঠে বলে উঠল:

“আশহাদু আল লা- ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মোহাম্মাদান আ’বদুহু ওয়া রাসুলুহু” “আমি সাক্ষ্য দিতেছি যে, আল্লাহ ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই। আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি মোহাম্মাদ (সাঃ) আল্লাহর বান্দাহ এবং রাসুল।”

নামাজে তাশাহুদ পড়া কি ওয়াজিব


তাশাহহুদ পড়া ও মধ্যের বৈঠক করা ওয়াজিব। ভুলে এটি ছুটে গেলে এবং নামাজের মধ্যেই মনে পড়লে শেষে সেজদায়ে সাহু দিলেই চলবে। নামাজের পর মনে হলে, নামাজ পুনরায় পড়তে হবে। স্পষ্ট মনে না পড়ে সন্দেহ হলে, সন্দেহের মধ্যে যে বিষয়টি প্রবল হবে সেটিই গ্রহণ করতে হবে।
উত্তর দিয়েছেন : আল্লামা মুফতি উবায়দুর রহমান খান নদভী
সূত্র : জামেউল ফাতাওয়া, ইসলামী ফিক্হ ও ফাতওয়া বিশ্বকোষ।

তাশাহুদ না পড়লে কি নামাজ হবে


ভুলে এটি ছুটে গেলে এবং নামাজের মধ্যেই মনে পড়লে শেষে সেজদায়ে সাহু দিলেই চলবে। নামাজের পর মনে হলে, নামাজ পুনরায় পড়তে হবে। স্পষ্ট মনে না পড়ে সন্দেহ হলে, সন্দেহের মধ্যে যে বিষয়টি প্রবল হবে সেটিই গ্রহণ করতে হবে।

ইমামের পিছনে তাশাহুদ না পড়লে নামাজ হবে কিনা


ইমামের পিছনে নামাজ পড়লে যদি ভুলে প্রথম বৈঠকে তাশাহহুদের পড় দুরুদ পড়ে ফেলেন, তাহলে ইমামের ভূল না হওয়ার কারনে আপনার সাহু সেজদা দিতে হবে না,। কারন ইমামের নামাজ ভুল হলে মুক্তাদির নামাজ ভুল হয়, তাই সাহু সেজদা দিতে হয়। তাই ভুল যেহেতু আপনার তাই সাহু সেজদা দিতে হবে না, আর নামাজ শুদ্ধ হবে কোন সমস্যা নেই।


নামাজে তাশাহুদ পড়ার হুকুম কি


আল্লাহ তাআলা মুমিনের জন্য প্রতিদিন ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়াকে ফরজ করেছেন। নামাজে বৈঠক বসা ফরজ কাজ। আর বৈঠকে তাশাহহুদ পড়া ওয়াজিব বা আবশ্যক।

আত্তাহিয়াতু কি ? 


আত্তাহিয়াতু আসলে, আল্লাহর সাথে আমাদের মহানবী (সঃ) কথোপকথন একটা অংশ। হযরত মোহাম্মদ সা  আমাদেরকে  আল্লাহ তাআ’লা সাথে  নামাজেই কত সুন্দর  ভাবে কথা বলার সহজ নিয়ম দেওয়া হয়েছে। নামাজ একমাত্র বন্ধার সাথে আল্লাহর কথা বলা। 

আত্তাহিয়াতু নামাজে পড়ার সাথে সাথে বন্ধার আল্লাহ তাআ’লা সাথে সরাসরি কথা হয়। আল্লাহ তাআ’লা সব গুনগান করা হয়। আল্লাহর সকল ধরনের ধরনের কাজে শুকরিয়া জানানো হয়। আল্লাহ তাআ’লা সরাসরি বন্ধার কথার উত্তর দেন।

হযরত মোহাম্মদ সা: এমন একটা ব্যবস্থা করে দিয়েছে যে বন্ধা যাতে আল্লাহর সাথে সরাসরি কথা ও সকল ধরনের কিছু ছায়তে পারেন। আমাদের নবী রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের কথায় ভাবতেন আমার উম্মত কিভাবে জান্নাতে যাবে।

আত্তাহিয়াতু একটি গুরুত্বপূর্ণ দোয়া। যা পড়া অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এটি ছাড়া নামাজ হয় না। নামাজ যেমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তেমনি আত্তাহিয়াতু একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

আমরা সকলেই এই দোয়াটি ভালো করে মুখস্ত করব এবং অন্যকে ভালো করে শিখাব। আল্লাহ তাআ’লা সবাইকে শিখার তুওপিক দান করুক আমিন।


Post a Comment

Post a Comment (0)

Previous Post Next Post